কিভাবে বিকাশে ডিপিএস খোলা যায়? বিকাশের মধ্যে ডিপিএস খোলার নিয়ম।

 

বিকাশে ডিপিএস খোলার সম্পূর্ণ নিয়ম

বিকাশে ডিপিএস খোলা যায় কীভাবে

কিভাবে বিকাশে ডিপিএস খোলা যায় তা বর্তমানে একটি জানার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের আজকের অর্থনীতিতে সঞ্চয় একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আজকের এই আলোচনায় আমরা জানতে পারবো বিকাশে ডিপিএস খোলতে কি কি কাগজপত্র লাগে, কোন একাউন্টের মাধ্যমে খোলতে হয়, বিকাশে ডিপিএস খোলার জন্য কত টাকা কিস্তি দিতে হয়, বিকাশে ডিপিএস খোলতে হলে কিস্তির টাকা মাসিক নাকি সপ্তাহে জমা দিতে করতে হবে, বিকাশে ডিপিএস এর মাধ্যমে কত টাকা মুনাফার হার হবে, বিকাশে ডিপিএস খোললে মেয়াদ শেষ হলে কত টাকা পাওয়া যাবে, বিকাশ ডিপিএস খুলতে নমিনির তথ্য কীভাবে যুক্ত করবো, বিকাশে ডিপিএস এর টাকা মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে কোন নিয়মে উত্তোলন করা যায় এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট আরও কিছু প্রয়োজনীয় টপিক নিয়ে আলোচনা করবো।

কিভাবে বিকাশ ডিপিএস খোলা যায়

বিকাশে ডিপিএস খোলতে হলে এর পূর্বশর্ত হলো আপনার মোবাইলে একটি বিকাশ এপ থাকতে হবে এবং আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলতে হবে এবং নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।  আর যদি আপনার কাঙ্ক্ষিত মোবাইল নাম্বারে  আগে থেকেই বিকাশ একাউন্ট খোলা থাকে তাহলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।

ধাপ-১

আপনার স্মার্ট ফোনে থাকা বিকাশ এপ্সটি ওপেন করুন এবং এখানে দুই নম্বর সারিতে “সেভিংস” নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। আপনাকে সেখান থেকে ক্লিক করে নিতে হবে।

তারপর স্ক্রিনের উপরে অংশে দেখতে পাবেন আপনার এই একাউন্টে কয়টি ডিপিএস একাউন্ট সচল আছে, কয়টি ম্যাচিরিউড হয়েছে এবং কয়টি বাতিল করেছেন।

এবং এর নিচে  আপনি দেখতে পাবেন “আপনার সেভিংস প্লান তৈরি করুন” একটি লিখা রয়েছে এবং তার নিচে “নতুন সেভিংস খুলুন” নামে একটি বাটন থাকবে। এবং এই বাটনে চাপ দিতে হবে।

ধাপ-২

এই ধাপে আপনি নির্বাচন করতে পারবেন যে আপনি কোন ধরনের ডিপিএস করতে চান। একটি সাধারণ ডিপিএস যা সাধারণ মুনাফাভিত্তিক এবং অপরটি ইসলামিক ডিপিএস যা শরীয়াভিত্তিক মুনাফা।

এখান থেকে আপনার পছন্দের অপশন নির্বাচন করতে হবে তবে ।

নির্বাচন করার পর আপনাকে বেছে নিতে আপনার সেভিংস খোলার উদ্দেশ্যটি। এখানে যে উদ্দেশ্যগুলো দেওয়া আছে তা যদি কাঙ্ক্ষিত না হয় তাহলে আপনি নিজের মত করে লিখতে পারেন।

 

কিভাবে বিকাশে স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে হয় তা জানতে এখানে ক্লিক করুন

ধাপ-৩

এই ধাপে এসে আপনাকে আপনার বিকাশে ডিপিএস খোলার জন্য আপনার নির্ধারিত ডিপিএসের মেয়াদ বাছাই করে নিতে হবে।

এক্ষেত্রে আপনি ৬ মাস থেকে ৪ বছর পর্যন্ত সময়ের জন্য ডিপিএস খুলতে পারবেন। আপনার পছন্দমতো একটি সময় নির্ধারণ করতে হবে।

ঠিক তার নিচেই একটি অপশন পাবেন সেখান থেকে জমা দেওয়ার ধরণ নির্বাচন করতে হবে। তবে এখান একটি বিষয় যে, আপনি যদি ৬ মাস থেকে ১২ মাস বা ১ বছর মেয়াদ নির্বাচন করেন তাহলে আপনাকে প্রতি সপ্তাহে জমা করতে হবে।

আর যদি আপনি ১ বছরের বেশি মেয়াদে রাখতে চান তাহলে কিন্তু আপনাকে প্রতি মাসে ডিপিএসের কিস্তির টাকা জমা করতে হবে।

এরপর আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে যে আপনি প্রতি কিস্তিতে কত টাকা করে জমা করতে চান। এখান আপনি  ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত যেকোনো একটি বেছে নিতে পারবেন।

ধাপ-৪

এই ধাপ থেকে আপনাকে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক নির্বাচন করতে হবে। যে ব্যাংকের অধীনে বিকাশে ডিপিএস করতে চাচ্ছেন তা নির্বাচন করবেন।

এক্ষেত্রে ব্যাংকের নামের সাথে সাপ্তাহিক বা মাসিক জমার পরিমাণ, বার্ষিক মুনাফার হার এবং মেয়াদপূর্তিতে প্রাপ্য টাকার পরিমাণ উল্লেখ থাকবে। আপনার নিজের মতো করে একটি প্লান নির্বাচন করে নিতে হবে।

এক্ষেত্রে একটি কথা বলে নিই। যদি মেয়াদ বেশি হয় তাহলে কিন্তু মুনাফার হার বৃদ্ধি পাবে।

ধাপ-৫

এই ধাপে এসে আপনার একাউন্টের বিপরীতে একজন নমিনি নির্বাচন করে দিতে হবে। তবে যদি পূর্বে নমিনির তথ্য না দেওয়া থাকে তাহলে এখান থেকে কিন্তু নমিনির তথ্য দিয়ে যুক্ত করে নিতে পারেন।

ধাপ-৬

এই ধাপে এসে আপনি এতক্ষণ যে কাজগুলো করেছেন তার একটি সম্পূর্ণ অভারভিউ দেখাবে। যা আপনার মোট জমার পরিমাণ কত হবে,  মুনাফা মোট কত পাবেন, মোট কত টাকা পাবেন, মেয়াদ কত তারিখ পূর্ণ হবে, পরবর্তী কত তারিখে কিস্তির টাকা জমা করতে হবে, এগুলো দেখতে পাবেন।

এবং নিচে এগিয়ে যান বাটনে চাপ দিয়ে সামনে যেতে হবে।

ধাপ-৭

এই ধাপে আপনার সকল বিষয়গুলো কনফার্ম করার জন্য আপনাকে আপনার বিকাশের PIN নাম্বার দিতে হবে। এবং এর পরের ধাপে নিয়ে যাবে যেখানে আপনাকে বিকাশে ডিপিএস-এর ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে।

এর জন্য আপনাকে নিচের অংশে চাপ দিয়ে ধরে রেখে কাজটি সম্পন্ন করতে হবে।

তাহলেই আপনি একটি নিশ্চিতকরণ মেসেজ পাবেন এবং আপনার বিকাশে ডিপিএস খোলা সম্পন্ন হয়েছে।

বিকাশ ডিপিএস খুলতে নমিনির তথ্য কীভাবে যুক্ত করবো

এর জন্য বিকাশে ডিপিএস খোলার জন্য যখন নমিনি তথ্য চাইবে তখন “নতুন নমিনি যুক্ত করুন” বাটনে চাপ দিলে আপনার নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্র, নমিনির নাম, জন্ম তারিখ এবং সম্পর্ক যুক্ত করে নিচের অপশনে চাপ দিলেই নমিনি যুক্ত হয়ে যাবে।

এখান থেকেও বিকাশ সম্পর্কে জানতে পারেন।

 

বিকাশে ডিপিএস খোলার জন্য জামার কিস্তির পরিমাণ কেমন হবে

    • প্রতি সপ্তাহে ২৫০/৫০০/১,০০০/২,০০০/৫,০০০ টাকা
    • প্রতি মাসে ৫০০/১,০০০/২,০০০/৩,০০০ টাকা

বিকাশ ডিপিএস সংশ্লিষ্ট কিছু প্রশ্ন ও উত্তরঃ

প্রশ্নঃ একটি বিকাশ একাউন্টে কয়টি ডিপিএস খোলা যাবে?

উত্তরঃ  একাধিক ডিপিএস খুলতে পারবেন। 

প্রশ্নঃ নমিনি কি পরিবর্তন করা যাবে?

উত্তরঃ  হ্যাঁ নমিনির তথ্য পরিবর্তন করতে পারবেন।

প্রশ্নঃ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কি বাতিল করা যাবে?

উত্তরঃ  হ্যাঁ, আপনি চাইলে বাতিল করতে পারবেন।

প্রশ্নঃ জমার কিস্তির টাকা যদি সময়মতো জমা না দিতে পারি তাহলে কি করতে হবে?

উত্তরঃ  আপনার একাউন্ট স্বক্রিয় থাকা অবস্থায় আপনার একাউন্ট থেকে জমার কিস্তির টাকা কেটে নেওয়া হবে। তবে যদি সাপ্তাহিক জমার ক্ষেত্রে তিন দিন এবং মাসিক জমার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১ সপ্তাহ এর মধ্যে জমা করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি ঐ দিনের জন্য মুনাফা পাবেন না। আর যদি আপনি এই দিনের মধ্যেও না জমা করতে পারেন তাহলে এই ডিপিএসের উপর কোনো প্রকার মুনাফা পাবেননা। 

পরিশেষে একটি কথা, এই নিবন্ধটি লিখা পর্যন্ত বিকাশ থেকে সর্বশেষ প্রাপ্ত আপডেটের মাধ্যমে তথ্যগুলো নেওয়া হয়েছে। তা যেকোনো সময় পরিবর্তন, পরিমার্জন করার ক্ষমতা বিকাশ কর্তৃপক্ষ অধিকার সংরক্ষণ করে থাকে।

তাই আপনি যখন বিকাশের মাধ্যমে ডিপিএস খুলবেন তখন বিকাশ এপ্স থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো পর্যাপ্ত না হলে তাদের এজেন্ট অফিস বা ব্র্যাক ব্যাংক-এ উপস্থিত হয়ে আপডেট জেনে নিতে পারেন।

তথ্যগুলো কেমন লাগলো তা কমেন্টের মাধ্যমে আপনার অভিব্যক্তি জানাতে পারেন।

Next Post Previous Post